১০ দিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে ৫০ কাউন্টের সুতার দাম বেড়েছে
প্রতি পাউন্ডে ২৫ টাকা। আর অন্য সব সুতায় পাউন্ডে ৮-১০ টাকা দরবৃদ্ধি
হয়েছে।
সুতার বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের সুতা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি
পাউন্ড ৫৫-৫৮ টাকায়। ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ৪৫ টাকা। অর্থাত্ এ সময়ের
ব্যবধানে ১০ কাউন্ডের সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ১০-১৩ টাকা। এছাড়া এখন ২০
কাউন্টের সুতা ৫৮-৬০; ৩০ কাউন্টের সুতা ৯৫-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই
সপ্তাহ আগে ৩০ কাউন্টের সুতার দাম ছিল পাউন্ডপ্রতি ৯২-৯৬ টাকা। বর্তমানে ৪০
কাউন্টের সুতা ১১২-১১৮ টাকায় বিক্রি হলেও ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ১০৮-১১২
টাকা। ৫০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ১৫৩-১৬০ টাকায়, দুই
সপ্তাহ আগে যা লেনদেন হয়েছিল ১২৮-১৩৩ টাকা দরে। সে হিসাবে ৫০ কাউন্টের
সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ২৫-২৬ টাকা। টানবাজারে বর্তমানে ৬০ কাউন্টের সুতা
পাউন্ডপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৮ টাকায়, যা আগে লেনদেন হয়েছিল ১৩২-১৩৮
টাকায়।
নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার
সরবরাহ সংকটের কারণে দাম রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। ফলে দেশে পণ্যটির আমদানি কমেছে,
যার প্রভাবে বাড়ছে সুতার দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন মৌসুমের তুলা না আসা
পর্যন্ত সুতার বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে।
তারা জানান, দেশের স্পিনিং মিলগুলো ভারত, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান,
আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে তুলা আমদানি করে থাকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক
বাজারে প্রায় এক মাস ধরে তুলা পাওয়া যাচ্ছে না। স্পিনিং মিলগুলো
আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহকৃত সব তুলা প্রায় এক মাস আগেই কিনে নিয়েছে। ফলে
নতুন মৌসুম না আসা পর্যন্ত তুলা পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা
দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, বর্তমানে যেসব স্পিনিং মিলে তুলা মজুদ আছে, তারা
সুতা উত্পাদন করতে পারছে। আর যাদের কাছে নেই, তারা উত্পাদন বন্ধ রেখেছে। এ
কারণে সুতার দাম বাড়ছে। আগামী অক্টোবরে আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন মৌসুমের
তুলা সরবরাহ হলেই বাজার স্থিরতায় পৌঁছবে।
টানবাজারের এক সুতা ব্যবসায়ী জানান, কয়েক দিন ধরে সুতার বাজার অস্থির।
ব্যবসায়ীরা সুতা কোন রেটে বেচাকেনা করবেন, তা ঠিক করতে পারছেন না। সে কারণে
সকালে এক রেটে সুতা বিক্রি করে বিকালে আবার নতুন রেটে বিক্রি
করছেন।আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম পাউন্ডে বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। ভারতীয়
তুলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি পাউন্ড ৭০-৭৫ টাকায়।
যেসব স্পিনিং মিলের কাছে তুলা মজুদ আছে, তারা মনোপলি ব্যবসা করছে। তারা
প্রতিদিনই মিলগেটে সুতার দাম বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম
বাড়তির দিকে রয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু যেসব স্পিনিং মিলে তুলা মজুদ ছিল, তাদের
মিলে কোনো সংকট নেই। কিন্তু তারাও তুলার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কথা
বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সুতার দাম বাড়লেও দেশে কাপড়ের দাম
বাড়ছে না। এর কারণে একদিকে যেমন তাতিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে সুতা
ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বেন।




